মোঃ শাফায়েত সবুজ- বাংলাদেশ রেলওয়ের সেবার মান উন্নয়ন এবং যাত্রীদের অভিযোগ ও পরামর্শ সরাসরি শোনার লক্ষ্যে বেনাপোল রেলওয়ে প্রাঙ্গণে এক বিশেষ ‘গণশুনানি’ অনুষ্ঠানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম), পাকশী-এর তত্ত্বাবধানে এই কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
বুধবার(২৩ ডিসেম্বর) বেলা ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত ঐ সভায় সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের নবাগত স্টেশন মাষ্টার আইনাল হাসান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লিয়াকত শরীফ(বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক,পাকশী।
বিশেষ অতিথিবর্গের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- মো. ময়েন উদ্দীন সরদার(বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী (লোকো).মো. হানিফ হোসেন(ডিইএন-১/পাকশী), হাসিনা আক্তার(ডিটিও/পাকশী),গৌতম কুমার কুন্ডু (ডিসিও/পাকশী), রিফাত শাকিল(ডিইই/পাকশী),আনোয়ার হোসেন(সেতু প্রকৌশলী,পাকশী),চাঁদ আহমেদ(সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী,যশোর)।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে ইমিগ্রেশন অফিসার ইনচার্জ মোর্তজা আহম্মেদ,বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশন সভাপতি-শামছুর রহমান,সাবেক সভাপতি-মফিজুর রহমান সজন,বেনাপোল পৌর বিএনপি’র সহ-সভাপতি ও বেনাপোল ট্রান্সপোর্ট এজেন্ট মালিক সমিতি’র সভাপতি-এ কে এম আতিকুজ্জামান সনি,পৌর বিএনপি’র সহ-সভাপতি-মাসুদুর রহমান মিলন,পৌর বিএনপি’র পরিবেশ সম্পাদক-মাসুদুর রহমান কাক্কু,শার্শা উপজেলা বিএনপি’র শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন-৯২৫ এর সাধারণ সম্পাদক-মো.সহিদ আলী সহ অনেকে।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে দফতর কর্তৃক এ আয়োজনে উন্মুক্ত গণশুনানিতে উঠে আসা প্রধান সমস্যাসমূহ তুলে ধরে বক্তারা বলেন,বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক রেলওয়ে স্টেশন, যা ভারতের পেট্রাপোল স্টেশনের সাথে যুক্ত।
যাত্রী সেবার মান বৃদ্ধি করতে সাধারণ যাত্রীরা যেন কোনো ভোগান্তি ছাড়াই তাদের সমস্যার কথা রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে পারেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধান পান, সেই লক্ষ্য নিয়েই রেল কর্তৃপক্ষকে কাজ করতে হবে।
টিকিট কালোবাজারি, ট্রেনের সময়ানুবর্তিতা বা বগির পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রাখতে হবে। রেলের উন্নয়নে নাগরিকদের সৃজনশীল পরামর্শ গ্রহণ করে পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রতি মাসে বা নির্দিষ্ট সময় অন্তর এই ধরণের আয়োজন আবশ্যকীয়।
এ ছাড়াও বানিজ্য সম্প্রসারনের ক্ষেত্রে পণ্য পরিবহন এবং পণ্য খালাসে ধীরগতি রোধে পণ্যবাহী আরো একটি রেল চালু করার অনুরোধ জানান মালিক সমিতি’র সভাপতি এ কে এম আতিকুজ্জামান সনি। অপরদিকে,রেল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণ এবং বকেয়া পরিশোধে জোর তাগিদ দেন বন্দরের হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠন-৯২৫ এর সাধারণ সম্পাদক-মো.সহিদ আলী।
পণ্য পরিবহনে উত্থাপিত পণ্যবাহী রেল বৃদ্ধি এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের বিষয়ে উত্থাপিত বিভিন্ন অভিযোগ শোনার পর তা সমাধানে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) লিয়াকত শরীফ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু কঠোর নির্দেশনা দেন। যেমন,কালোবাজারি রুখতে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ। প্রতিটি স্টেশনে প্রতিদিনের কাজের রিপোর্ট ছবিসহ জমা দেওয়ার ব্যবস্থা।
খাবারের দাম বেশি রাখলে ক্যাটারিং ঠিকাদারের লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি। রেলওয়ে পুলিশ ও আরএনবি-কে বগির ভেতরে নিয়মিত টহল দেওয়ার নির্দেশনা দেন। এ ছাড়াও স্টেশন প্লাটফর্ম মসজিদের জন্য একটি কার্পেট দেওয়ারও সিদ্ধান্ত দেন তিনি।
অনুষ্ঠানটি’র সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন মো.নাজমুল হাসান(ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী, এস এস এ-ই,বেনাপোল)।


0 Comments